রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্রলীগ নেতার হাতে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় অভিযুক্তের শাস্তির দাবিতে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করেছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এক মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি পেশ করেন।

লিখিত বক্তব্য ও দাবি পেশ করেন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আল আমিন। তিন দফা দাবিতে জানানো হয়, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সিনহাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে। ভিডিও ফুটেজ দেখে ঘটনায় জড়িত সকলকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে এবং টুর্নামেন্ট চলাকালীন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে ভেটেরিনারি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আল আমিন বলেন, গত রবিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ ফুটবল প্রতিযোগিতার অংশবিশেষ ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বনাম আইবিএ খেলাটি টাইব্রেকারে গড়ায়। এ সময় রেফারির সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে আইবিএ-র শিক্ষার্থীরা বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে আইবিএ-এর শিক্ষার্থীরা ভেটেরিনারির শিক্ষার্থীদের প্রতি আক্রমণাত্মক আচরন শুরু করে। তখন ভেটেরিনারির শিক্ষক অধ্যাপক মেইজুর রহমান তাদেরকে শান্ত হতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা শান্ত না হয়ে আরও বেশি উচ্ছৃঙ্খল আচরণ শুরু করে।

একপর্যায়ে আইবিএ-র ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবু সিনহা সৌমিক ওই শিক্ষকের কলার চেপে ধরে টানাহেঁচড়া করে। শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করলে তারা তাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় ভেটেরিনারির প্রথম বর্ষের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী টুটুলকে মাটিতে ফেলে পেটাতে ও পদদলিত করাসহ আরো কয়েকজকে আহত করে বলে জানান তারা।

এর আগে গত রবিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান মাঠে ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) ও ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের খেলা চলাকালে দুই দলের হাতাহাতি হয়। এসময় ভেটেরিনারি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মোইজুর রহমানকে কলার ধরে টানাহিঁচড়া করে আইবিএ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সিনহা। এ ঘটনায় রবিবার বিকালে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

তদন্তের বিষয়ে জনতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক সহকারী অধ্যাপক জহুরুল আনিস বলেন, আমাদের সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ইতমধ্যে কাজ শুরু করেছি। আশা করছি নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রতিবেদন জমা দিতে পারব।